মকর রাশি হল রাশি চক্রের দশম রাশি।উক্ত রাশির অধিপতি হলেন ন্যায় এবং কর্মের অধিপতি শনি। রাশি চক্রের মকর ও কুম্ভ রাশির অধিপতি হলেন শনি। এরমধ্যে কুম্ভ রাশি হল শনির মূল ত্রিকোণ রাশি।আর মকর রাশিকে শনির সাধারণ রাশি বলা হয়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে দেবগুরু বৃহস্পতির অবস্থান
যদি জন্ম কুণ্ডুলিতে গুরু শুভ অবস্থানে থাকেন তথা শুভ গ্রহের প্রভাবযুক্ত হন,তাহলে জাতক-জাতিকার জীবনে উপরিউক্ত বিষয়গুলির শুভফল লাভ হয়।আর যদি অশুভ প্রভাব যুক্ত বা পাপ গ্রহের দ্বারা পীড়িত অবস্থায় কুণ্ডুলীতে অবস্থান করেন,তাহলে জাতক-জাতিকার জীবনে গুরুর কারক তত্ত্বগুলির প্রাপ্তিতে বাধা উৎপন্ন হয়।যেমন - ধন সঞ্চয়ে বাধা,পারিবারিক ক্লেশ, বিদ্যার্জনে বাধা,সন্তান প্রাপ্তিতে সমস্যা,বিবাহে বাধা ইত্যাদি সমস্যা উৎপন্ন হয় ।
লগ্ন বা রাশিতে গুরুর অবস্থান ফল
লগ্ন বা রাশিস্থানে গুরু শুভ প্রভাবযুক্ত বা শুভ ভাবের অধিপতি হয়ে অবস্থান করলে জাতক-জাতিকারা ধর্ম-কর্মে বিশ্বাসী হন। ন্যায়,নীতিজ্ঞ তথা গুরুর আদর্শযুক্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকেন।সুকর্ম ও সুবিচারের অধিকারী হন।গুরুর আদর্শের সাথে যুক্ত হয়ে চলার মধ্যে দিয়ে উক্ত জাতক-জাতিকারা তাদের জীবনে অভূতপূর্ব সাফল্য পেতে পারেন। দূর্বল আর্থিক অবস্থা যুক্ত ঘরে জন্মগ্রহণ করেও গুরুর কল্যাণকারী প্রভাবের দ্বারা তাদের জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে উচ্চকোটির পর্যায়ে পৌঁছায়।
আর যদি লগ্ন বা রাশি স্থানে গুরু পাপ প্রভাব যুক্ত হয়ে,অশুভ ভাবের অধিপতি হয়ে বা নীচ রাশিতে অবস্থান করেন,তাহলে উক্ত জাতক-জাতিকাদের জীবনে বিভিন্ন সমস্যা, দুঃখ-কষ্টের সন্মুখীন হতে হয়। উক্ত অবস্থায় গুরুর বৈশিষ্ট্যাবলী জাতক-জাতিকার স্বভাব চরিত্রের উপর সঠিকভাবে ছাপ ছাড়তে পারে না।পারিবারিক, আর্থিক ,সন্তান কষ্ট, বিদ্যার্জনে বাধা ইত্যাদি সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে গুরুর অবস্থান ফল
মকর রাশিতে গুরু অবস্থান করলে,উক্ত অবস্থানকে গুরুর নীচ অবস্থান বলা হয়।তথা মকর রাশিতে গুরু নীচ হয়ে যান।উক্ত পর্যায়ে গুরু সঠিকভাবে ফল প্রদান করতে পারেন না ।গুরুর নীচ অবস্থানের কারণে উক্ত জাতক-জাতিকাদের জীবনে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা,আর্থিক,পারিবারিক,সন্তান,শিক্ষা ইত্যাদি গুরুর কারক তত্ত্বগুলি নিয়ে সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।লগ্ন বা রাশি স্থানে গুরু নীচ অবস্থায় যদি পাপ প্রভাবযুক্ত হন, সেক্ষেত্রে অবস্থা আরও বেশী খারাপ হয়ে যায়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে গুরুর শুভফল পাওয়ার উপায়
লগ্ন স্থান বা রাশি স্থানে গুরু যে কোন অবস্থায়ই অবস্থান করুন না কেন,গুরুর আদর্শের সাথে যুক্ত হয়ে চলার মধ্যে দিয়ে গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।তথা দৈনন্দিন কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,ধর্ম,ন্যায়-নীতি পালনের মধ্যে দিয়ে গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।
এছাড়াও কুণ্ডুলীর যে কোন একটি ঘরের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নির্ভর করে, সেই ঘরের বিপরীত ঘরের সাথে উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলার উপর ।সামঞ্জস্য যত ভালো গড়ে তোলা যায়,যে কোন একটি ঘরের বৈশিষ্ট্যও ভালো হয়।আর যদি সামঞ্জস্য ভালো তৈরি করা না যায়,তাহলে ঘরের বৈশিষ্ট্যও ভালো হয় না। উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলতে পারলে শুধু বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নয়,বৃদ্ধিও হয়।
মকর লগ্ন বা রাশিতে গুরু অবস্থান করলে গুরুর সপ্তম দৃষ্টি পড়ে উক্ত লগ্ন বা রাশির সপ্তম ঘরে,কর্কট রাশিতে।যে কর্কট রাশিকে গুরুর উচ্চস্থ ঘর বলা হয় ।অতএব উক্ত লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা তাদের সপ্তম ঘরের দৈনন্দিন করণীয় কর্মে যত বেশী সামঞ্জস্যতা গড়ে তুলতে পারেন,ততবেশী তারা তাদের লগ্ন বা রাশিতে স্থিত গুরুর শুভফল লাভ করতে পারেন।
সপ্তম ঘর থেকে জীবনসঙ্গী,পার্টনার বা দৈনন্দিন জীবনে আমরা যাদের সাথে বিভিন্ন প্রকারের আদান-প্রদান করি,তাদের বিচার করা হয়।অতএব জীবনসঙ্গী,পার্টনার বা দৈনন্দিন আদান-প্রদান করা প্রত্যেকের সাথে গুরুর আদর্শ পালনের মধ্যে দিয়ে কর্ম করলে, লগ্ন বা রাশি স্থানে নীচ অবস্থায় অবস্থান রত গুরুর শুভফল লাভ করা যায়।
উপসংহার
সর্বশেষে বলা যায় যে মকর লগ্ন বা রাশির লগ্ন বা রাশি স্থানে গুরু অবস্থান রত জাতক-জাতিকারা দৈনন্দিন কর্মে সর্বদা শৃঙ্খলা,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,জ্ঞান,শিক্ষা ও ধর্মের পালন করে চলুন।তাতে গুরুর শুভফল লাভের মধ্যে দিয়ে সুখ-শান্তিতে জীবন অতিবাহিত করতে পারবেন।
Read more