জ্যোতিষ শাস্ত্রে সুখের মূল্যায়ন চতুর্থ ঘর থেকে করা হয়। চতুর্থ ঘর,ঘরের অধিপতি ও কারক গ্রহের শুভ-অশুভ অবস্থান ও বলাবলের উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় যে কোন জাতক-জাতিকার সুখের হিসাব। যদি চতুর্থ ঘর ও ঘরের অধিপতি শুভ প্রভাবযুক্ত হয়,তাহলে উক্ত ঘরের বিষয়গুলির ক্ষেত্রে শুভফল লাভ হয়। আর যদি অশুভ প্রভাব যুক্ত হয়,তাহলে বিভিন্ন সমস্যা ও দুঃখ-কষ্টের সন্মুখীন হতে হয়।
জন্ম কুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর প্রভাব
জন্মকুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব অপরিসীম। কালপুরুষের কুণ্ডুলীর বিচার ব্যতীত যে কোন কুণ্ডুলীর বিশ্লেষণ কখনও সম্পূর্ণ হয় না।অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
ধনু লগ্ন বা রাশির চতুর্থ বা সুখের ঘরে মীন রাশির অবস্থান।যে মীন রাশি থেকে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর ব্যয় বা খরচের বিচার করা হয়।কালপুরুষের ব্যয়ের ঘর উক্ত লগ্ন বা রাশির চতুর্থ ঘরে অবস্থান করায়,উক্ত ঘরের বিষয়গুলির ব্যয় হতে দেখা যায়।অর্থাৎ ভূমি-ভবন-বাহন,ঘরের আসবাবপত্র,বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রপাতি, বিলাসিতার জিনিসপত্রাদি ইত্যাদির জন্য ব্যয় হতে দেখা যায়।অর্থাৎ ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা তাদের জীবনে সুখের জন্য অধিক ব্যয় করেন।
কালপুরুষের ব্যয়ের ঘর তাদের সুখের ঘরে অবস্থানের কারণে সুখের বিষয়গুলির জন্য তাদের জীবনে ব্যয়ের ধারাবাহিকতা কম-বেশি সর্বদাই বজায় থাকে।অনেক সময় আয়ের সাথে সঙ্গতি না থাকা ব্যয়ের কারণে তাদের বিভিন্ন সমস্যা বা দুঃখ কষ্টের সন্মুখীন হতে দেখা যায়। পারিবারিক ঝগড়াঝাটি উৎপন্ন হয়।এমন অবস্থায় তাদের সুখের ঘরের শুভফল পাওয়ার উপযুক্ত পথ অনুসরণের মধ্যে দিয়েই শুভফল লাভ করা যায়।
সুখের ঘরের শুভফল পাওয়ার উপায়
সুখের ঘরের শুভফল লাভের জন্য উক্ত জাতক-জাতিকাদের তাদের চতুর্থ ঘরের ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হয়।যাতে ব্যয়ের কারণে তারা সমস্যার সন্মুখীন না হন। কুণ্ডুলী শাস্ত্রে যে কোন একটি ঘরের ভারসাম্য বজায় থাকা নির্ভর করে,সেই ঘরের বিপরীত ঘরের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার উপর।যেমন - লগ্নের ভারসাম্য বজায় থাকা নির্ভর করে সপ্তম ঘরের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার উপর।তেমনি চতুর্থ বা সুখের ঘরের ভারসাম্য বজায় থাকা নির্ভর করে দশম বা কর্মের ঘরের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার উপর।
ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা তাদের দশম বা কর্মের ঘরের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার মধ্যে দিয়েই তাদের সুখের ঘরের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেন।তাদের কর্মের ঘরের কন্যা রাশির বৈশিষ্ট্য অনুসারে কর্মের মধ্যে দিয়ে তারা সুখ ও কর্ম দুটি ঘরের মধ্যে উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলতে পারেন।কন্যা রাশির বৈশিষ্ট্য মেনে কর্ম করলে কর্ম দ্বারা আয়ের উৎস বজায় থাকে।আর আয় সঠিক বজায় থাকলে সুখের ক্ষেত্রে ব্যয় হলেও সমস্যা উৎপন্ন হয় না ।
সেই সাথে চতুর্থ ঘরের মীন রাশির অধিপতি যেহেতু দেবগুরু বৃহস্পতি,তাই চতুর্থ ঘরের কর্মক্ষেত্রে গুরুর বৈশিষ্ট্য মেনে চলা।তথা উক্ত ঘরের কর্মক্ষেত্রে ধর্ম,জ্ঞান,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,শৃঙ্খলা ও ন্যায়-নীতি বজায় রেখে চলার মধ্যে দিয়েও সুখের ঘরের ভারসাম্য বজায় রাখা যায়।
উপসংহার
সবশেষে বলা যায় যে কর্মের ঘরের সাথে উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে এবং দেবগুরু বৃহস্পতির আদর্শ অনুসারে চলার মধ্যে দিয়ে ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা সুখের ঘরের শুভফল পেতে পারেন।
আরো পড়ুন