জ্যোতিষ শাস্ত্রে ধন ও পরিবারের বিচার কুণ্ডুলীর চক্রের দ্বিতীয় ঘর থেকে করা হয়।তাছাড়া আত্মীয়-স্বজন,খাবার-দাবার,মুখের বাণী ও চেহারার বিচারও দ্বিতীয় ঘর থেকে করা হয় ।দ্বিতীয় ঘর,ঘরের অধিপতি ও কারক গুরুর শুভাশুভ অবস্থান ও বলাবলের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়,উক্ত ঘরের শুভাশুভ ফলের হিসাব।
দ্বিতীয় ঘর,ঘরের অধিপতি ও কারক গুরু শুভ অবস্থানে থাকলে,ধন ও পারিবারিক বিষয়ে সুখ ও শান্তি লাভ হয়।আর অশুভ অবস্থানে থাকলে সুখ-শান্তির অভাব ঘটে।
কুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব
জন্মকুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব অপরিসীম। কালপুরুষের কুণ্ডুলীর বিচার ব্যতীত যে কোন কুণ্ডুলীর বিশ্লেষণ কখনও সম্পূর্ণ হয় না।অসম্পূর্ণ থেকে যায়।তুলগ্ন বা রাশির দ্বিতীয় বা ধন ও পরিবারের ঘরের রাশি হল বৃশ্চিক রাশি।যে রাশি থেকে কালপুরুষের অষ্টম ঘরের বিচার করা হয়।কালপুরুষের কুণ্ডুলীতে বৃশ্চিক রাশিকে নাকারাত্মক রাশি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।কারণ বৃশ্চিক রাশি থেকে কালপুরুষের দুঃখ,কষ্ট,যন্ত্রণা,মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্টের বিচার করা হয়।
কালপুরুষের নাকারাত্মক একটি রাশি তাদের দ্বিতীয় ঘরে অবস্থান করায় উক্ত ঘরের বিষয়গুলির শুভফল পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা উৎপন্ন হয়।যদি বৃশ্চিক রাশির শুভফল পাওয়ার উপযুক্ত পথ অনুসরণে না চলা যায়।আর্থিক,পারিবারিক,আত্মীয়-স্বজন, খাবার-দাবার সহ দ্বিতীয় ঘরের বিষয়গুলির এক বা একাধিক বিষয় থেকে সমস্যা সন্মুখীন হয়।
ধন-পরিবারের ঘরের শুভফল লাভের উপায়
তুলা লগ্ন বা রাশির ধন পরিবারের ঘরের বৃশ্চিক রাশির শুভফল পাওয়ার উপায় হল,উক্ত রাশি স্থিত ঘরের করণীয় কর্মে উপযুক্ত সচেতনতা ও সঠিক বিচারের মধ্যে দিয়ে কর্ম করা।সচেতনতা ও বিচার বিহীন বৃশ্চিক রাশি স্থিত ঘরের কর্ম করলে তবেই বিভিন্ন সমস্যা,দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়।
উদাহরণ হিসাবে-মনে করুন কোন একজন ব্যক্তির ল্যাপটপ সম্বন্ধে বিশেষ কোন ধারণা নেই।উনার হঠাৎ ইচ্ছা হল একটি ল্যাপটপ কেনার।উনি বাজারে গেলেন,আর কোন যাচাই ছাড়াই ল্যাপটপ কিনে নিয়ে এলেন।কেনার কিছুদিন পর থেকে সেটিতে দেখা দিল বিভিন্ন সমস্যা।আজ এক সমস্যা তো কাল আরেক সমস্যা।এমন অবস্থায় সেই ল্যাপটপটি সেই ব্যক্তির জন্য মানুষিক অশান্তি বা মানুষিক দুঃখ-কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ালো।সেক্ষেত্রে উনি যদি যোগ্য কারো পরামর্শ নিয়ে বা যোগ্য কোন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সেটি কিনতে যেতেন,তাহলে ভালো জিনিসই কিনতে পারতেন।সেই ল্যাপটপের কারণে উনাকে মানুষিক অশান্তি পেতে হত না।
তেমনি তুলা লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের দ্বিতীয় ঘরের করণীয় কর্মে উপযুক্ত সচেতনতা ও বিচারের মধ্যে দিয়ে কর্ম করতে হয়।ধনসঞ্চয়ের বিষয় হোক বা পারিবারিক কর্ম বা খাবার দাবারের বিষয়,দ্বিতীয় ঘরের প্রত্যেকটি কর্ম উপযুক্ত সচেতনতা ও বিচারের মধ্যে দিয়ে করা উচিত।
সেই সাথে বৃশ্চিক রাশি থেকে যেহেতু কালপুরুষের দুঃখ-কষ্টের সাথে মৃত্যুরও বিচার করা হয়,তাই বৃশ্চিক রাশিকে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের সাথে তুলনা করা যায়।মৃত্যু কখন আসে যেভাবে আমরা আগে অনুমান করতে পারি না,তেমনি অন্ধকারেও আমরা কোন কিছু খুঁজে পেতে পারি না। উত্তম জীবন শৈলী ও সচেতনতার মধ্যে দিয়ে যেভাবে মৃত্যুকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়,তেমনি আলোর সাহায্যে অন্ধকারে কোনকিছু খুঁজে পাওয়া যায়।
বৃশ্চিক রাশি থেকে জ্ঞানের আলোর সাহায্যে শুভফল লাভ করা যায়।আর আমাদের জ্ঞানকে সঠিক দিশা দেখানোর একমাত্র মাধ্যম হল ধর্ম।ধর্মপথে চলার মধ্যে দিয়েই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞানের ব্যবহার করা যায়।
উপসংহার
অতএব তুলা লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা ধন-পরিবার সম্বন্ধীয় যে কোন কর্ম উপযুক্ত সচেতনতা ও বিচারের মধ্যে দিয়ে করুন।সেই সাথে কর্মক্ষেত্রে ধর্ম ও ন্যায়-নীতি বজায় রেখে চলুন।তাতে বৃশ্চিক রাশির অশুভ ফলের পরিবর্তে গুপ্ত ধন,গুপ্তবিদ্যার মত শুভফলও করা যায়।