জ্যোতিষ শাস্ত্রে দাম্পত্য সুখের বিচার জন্ম কুণ্ডুলীর সপ্তম ঘর থেকে করা হয়।সপ্তম ঘর,ঘরের অধিপতি এবং বিবাহ কারক গুরু-শুক্র এবং নবাংশ কুণ্ডুলীর উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় দাম্পত্য জীবনের সুখ ও শান্তি ।
সুখী বিবাহিত জীবনের মাপকাঠি
সপ্তম ঘর,ঘরের অধিপতি ও বিবাহ কারক গুরু-শুক্র শুভ অবস্থানে থাকলে বিবাহিত জীবন চলে সুন্দরতার মধ্যে দিয়ে।বজায় থাকে সুখ ও শান্তি।আর অশুভ অবস্থানে থাকলে বিবাহিত জীবনে দেখা দেয় ঝগড়া-ঝাটি মনমালিন্য সহ বিভিন্ন সমস্যা। সপ্তম ঘর বা ঘরের অধিপতি দুই বা ততোধিক অশুভ গ্রহ দ্বারা পীড়িত হলে অনেক ক্ষেত্রে ডিভোর্সের মত অবস্থা তৈরি হয়।
দাম্পত্য সুখের বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব
কালপুরুষের নবম ঘরের রাশি, ধনু লগ্ন বা রাশির লগ্ন বা রাশি স্থানে স্থান পাওয়ায় উক্ত লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের মধ্যে কালপুরুষের নবম ঘরের বৈশিষ্ট্যগুলি দেখতে পাওয়া যায়।অর্থাৎ জাতক-জাতিকা ধার্মিক,জ্ঞানী এবং উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহী বা উচ্চশিক্ষিত হন ।তবে যদি লগ্ন বা রাশি বা লগ্ন বা রাশির অধিপতি দেবগুরু বৃহস্পতি পাপ পীড়িত বা কোন অশুভ গ্রহের দ্বারা বা কোন অশুভ ঘরের সাথে সম্পর্কযুক্ত হন,তাহলে জাতক-জাতিকার মধ্যে উপরিউক্ত গুণাবলীগুলি কম দেখা যায়।তবে কালপুরুষের নবম ভাবের বা গুরুর বৈশিষ্ট্য কম বেশি অবশ্যই থাকে ।
অন্যদিকে উক্ত লগ্ন বা রাশির সপ্তম ঘরের রাশি হল মিথুন রাশি ।যে রাশির অধিপতি হল বুধ গ্রহ । কালপুরুষের কুণ্ডুলীর হিসাব অনুযায়ী মিথুন রাশি কালপুরুষের তৃতীয় ঘরের রাশি ।যে তৃতীয় ঘর থেকে কালপুরুষের সাহস-পরাক্রম,ছোট ভাই-বোন,পাড়া-পড়শী,লেখনী কার্য্য ইত্যাদির বিচার করা হয় ।
সুখী দাম্পত্য জীবনের বৈশিষ্ট্য
কুণ্ডুলীর যে কোন একটি ঘরের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নির্ভর সেই ঘরের বিপরীত ঘরের সাথে উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলার উপর ।সামঞ্জস্য যত ভালো গড়ে তোলা যায়,যে কোন একটি ঘরের বৈশিষ্ট্যও ভালো হয়।আর যদি সামঞ্জস্য ভালো তৈরি করা না যায়,তাহলে ঘরের বৈশিষ্ট্যও ভালো হয় না। উপযুক্ত সামঞ্জস্য গড়ে তুলতে পারলে শুধু বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নয়,বৃদ্ধিও হয়।
লগ্নের বৈশিষ্ট্য ভালো থাকা নির্ভর করে সপ্তম ঘরের সাথে সামঞ্জস্য গড়ে তোলার উপর।তেমনি সপ্তম ঘরের বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে লগ্নের সাথে সামঞ্জস্য তৈরীর উপর।
সুখী দাম্পত্য জীবনের উপায়
ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা তাদের সপ্তম ঘরের মিথুন রাশির সাথে সামঞ্জস্য গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে বিবাহিত জীবন সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারেন।সেই সাথে তাদের লগ্নের বৈশিষ্ট্যের বৃদ্ধিও করতে পারেন।তাদের লগ্ন বা রাশি যেহেতু কালপুরুষের ভাগ্য স্থানের রাশি,তাই তারা তাদের ভাগ্যের বৃদ্ধিও করতে পারেন।
মিথুন রাশি থেকে কালপুরুষের সাহস-পরাক্রম বা পরিশ্রমের বিচার করা হয়। তাই ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের বিবাহিত জীবনের কর্মক্ষেত্রে পরিশ্রমকে প্রথমিকতা দিয়ে চলতে হয়।শ্রমের মধ্যে দিয়েই বিবাহিত জীবনের সুন্দরতা বজায় রাখতে হয়।সেক্ষেত্রে শারীরিক শ্রম বা মানুষিক শ্রম যে কোনটাই হতে পারে।আর সপ্তম ঘরের শ্রমের মধ্যে দিয়ে, জীবন সঙ্গীর সহায়তায় তারা তাদের ভাগ্যের আমূল পরিবর্তনও করতে পারেন।
দাম্পত্য জীবন পরিচালনায় দেবগুরু বৃহস্পতির গুরুত্ব
ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের বিবাহিত জীবন পরিচালনায় তাদের লগ্ন বা রাশির অধিপতির বৈশিষ্ট্যকে পাথেয় করে চলা শুভ ফলদায়ী ।বিবাহিত জীবনের কর্মে ধর্ম,জ্ঞান এবং শিক্ষা,শৃঙ্খলা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে গুরুর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয় এবং বিবাহিত জীবন চলে সুন্দরতার মধ্যে দিয়ে।
উপসংহার
অতএব ধনু লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা বিবাহিত জীবন পরিচালনায় পরিশ্রমকে গুরুত্ব দিয়ে চলুন এবং দেবগুরু বৃহস্পতির আদর্শকে মেনে চলুন।তাতে জীবনসঙ্গীর সহায়তায় আপনাদের ভাগ্যের হবে বৃদ্ধি এবং আপনাদের স্বপ্ন পাবে বাস্তবের রূপ ।
আরো পড়ুন