কর্মের গঠনে ধর্মের অবদান।

easyastroo
0

জ্যোতিষ শাস্ত্রে জন্ম কুণ্ডুলীর নবম ঘরকে ভাগ্যের ঘর বলা হয়। কুণ্ডুলীতে উক্ত ঘরের শুভাশুভ অবস্থানের উপর নির্ভর করে আমাদের জীবনের সুখ-সুবিধা,আয়-উন্নতি । যদি ভাগ্যের ঘর কুণ্ডুলীতে বলবান অবস্থায় থাকে,তাহলে জীবনে সুখ-সুবিধা,আয়-উন্নতি অধিক মাত্রায় লাভ হয়। আর ভাগ্যের ঘর যত দুর্বল হয়,জীবনে দুঃখ-কষ্ট ও বিভিন্ন প্রকারের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই জন্মছকের 12টি ঘরের মধ্যে ভাগ্যের ঘরকে সর্বাধিক গুরুত্বপুর্ণ ঘর বলা হয়।


কর্মের গঠনে ধর্মের অবদান।

কর্মের ঘরের গঠনে ভাগ্যের ঘরের ভূমিকা

ভাগ্যের ঘরের পরবর্তী ঘর হল কর্মের ঘর বা দশম ঘর। আমাদের জন্ম কুণ্ডুলীর প্রথম ঘরের পরবর্তী ঘরকে তথা দ্বিতীয় ঘরকে জাতক-জাতিকার ধনের  ঘর বলা হয়। ঠিক তেমনি নবম ঘরের পরবর্তী ঘর তথা দশম ঘর হল ভাগ্যের ধনের ঘর। আবার দ্বিতীয় ঘরের খরচের ঘর যেহেতু লগ্ন বা রাশি।অর্থাৎ স্বয়ং ব্যক্তি বা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব,তেমনি  দশম ঘরের খরচের ঘর নবম ঘর বা ভাগ্যের ঘর।

কুণ্ডুলীর দ্বিতীয় ঘর গঠিত হয় লগ্ন বা রাশির ব্যয় দ্বারা।অর্থাৎ জাতক-জাতিকার শারীরিক ব্যয় বা ব্যক্তিত্বের ব্যয় দ্বারা।  অর্থাৎ শারীরিক ও মানুষিক পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় ঘর বা ধনের ঘরের গঠন হয়। তেমনি নবম ঘরের বা ভাগ্যের ঘরের ব্যয়ের মধ্যে দিয়ে কর্ম বা দশম ঘরের গঠন হয়।ভাগ্যের ঘর থেকে যেহেতু ধর্ম,উচ্চশিক্ষা ইত্যাদির বিচার করা হয়,তাই ধর্মজ্ঞান ও উচ্চশিক্ষা যত ভালো বা উচুমানের হয়,কর্মের গঠনও তত ভালো বা উচুমানের গঠন হয়।

কর্মের গঠনে শিক্ষা ও জ্ঞানের মহত্ব

কর্মের গঠনে ধর্ম ও শিক্ষা দুটির সমান প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।শুধু ধর্মজ্ঞান দ্বারাও কর্ম ভালো করা যায় না,যদি না সেই ধর্মজ্ঞানে উচ্চশিক্ষার প্রভাব না থাকে ।আর শুধু উচ্চশিক্ষিত হলেও কর্ম ভালো করা যায় না,যদি না সেই উচ্চশিক্ষায় ধার্মিক জ্ঞানের সংযুক্তি না ঘটে ।ধর্মজ্ঞান এবং উচ্চশিক্ষার মেলবন্ধন দ্বারাই আদর্শ মানের কর্মের গঠন করা যায়।

যদি আমাদের ধর্মজ্ঞান কম হয়, তবে আমাদের কর্মেও ধর্মের প্রয়োগ কম হবে। তেমনি যদি উচ্চশিক্ষা কম অর্জিত হয়,তবে কর্মক্ষেত্রে গুণগত শিক্ষার ব্যবহারও কম হবে। ফলস্বরূপ কর্মের গঠনও দুর্বল হবে।আর যদি কর্মের গঠন দূর্বল হয়,তাহলে ধন-পরিবারের গঠনও দূর্বল হবে। যার কারণে জীবনে সুখ-সুবিধার সঞ্চয়ও কম হবে।

তাই জীবনে সুখ-শান্তির মূল বিষয় হলো আমাদের জন্ম কুণ্ডুলীর নবম ঘরের বিষয়গুলি, অর্থাৎ ধর্মীয় জ্ঞান এবং উচ্চ শিক্ষা সহ নবম ঘরের বিষয়গুলি।ধর্মীয় জ্ঞান এবং উচ্চ শিক্ষাই জীবনের সুখ-শান্তির মূল রসদ। এখানে উচ্ শিক্ষার পরিবর্তে যদি সাধারণ শিক্ষাও লাভ করা যায়, তবুও সুখ-শান্তি সম্ভব। কিন্তু ধর্ম ছাড়া সত্যিকারের সুখ কখনোই লাভ করা যায় না। যদি কর্ম ও ধর্মের সংযুক্তি না ঘটে, তবে ধনসম্পদের দিক থেকে সুখী হলেও পারিবারিক বা স্বাস্থ্যগত বা মানুষিক দিক থেকে সুখী হওয়া যায় না। আর যদি কর্ম ধর্মের সংযুক্তি ঘটানো যায়, তাহলে জীবনের সব দিকেই সুখী হওয়া সম্ভব।ধর্মের পথ ঈশ্বরপ্রদত্ত এমন একটি পথ, যার মাধ্যমে চললে জীবনের সমস্ত সমস্যার থেকে মুক্তি লাভ করা যায় এবং সুখী হওয়া যায়।

আমরা যত বেশি ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারবো, তত বেশি কর্মক্ষেত্রে তার ব্যবহার করতে পারবো। আমাদের কর্মও হবে ধর্মসম্মত । ঠিক তেমনি, আমরা যত বেশি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করবো, ততই কর্মক্ষেত্রে তার ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মের উচ্চ মানের গঠন করতে পারবো এবং জীবনে উচ্চস্তরের সুখ-সুবিধা লাভ করতে পারবো।যদি ধর্মীয় জ্ঞান ও উচ্চ শিক্ষা যথাযথভাবে অর্জন করতে না পারি, তবে কর্মের গঠনও দুর্বল হবে এবং জীবনে সুখ-সুবিধাও কম হবে।

উপসংহার

পার্থিব সুখ-শান্তি প্রাপ্তির মূল রসদ হল উচ্চ স্তরের কর্ম।আর সুকর্মের গঠন করা যায় উচ্চশিক্ষা আর ধর্মজ্ঞানের মেলবন্ধনের মধ্যে দিয়ে।তাই উচ্চশিক্ষা আর ধর্মপথ অবলম্বনের মধ্যে দিয়েই আমরা প্রকৃত সুখ-শান্তি লাভ করতে পারি।

আরো পড়ুন

    

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)