আমাদের জীবনের সুখের মূল রসদ হল ভাগ্য।সুখ-শান্তি নির্ভর করে ভাগ্যের উপর।আর ভাগ্যের গঠন করতে হয় কর্মের সঠিক ব্যবহার দ্বারা।কর্মক্ষেত্রে সঠিক সাহস-পরাক্রমের ব্যবহার বা পরিশ্রমের মধ্যে দিয়েই ভাগ্যের গঠন করতে হয়।তাই সাহস-পরাক্রম বা পরিশ্রমকেই ভাগ্যের মূল চাবি বলা হয়।
জ্যোতিষ শাস্ত্রে পরিশ্রমের বিচার কুণ্ডুলীর তৃতীয় ঘর থেকে করা হয়।জ্যোতিষীয় ভাষায় তৃতীয় ঘরকে সাহস পরাক্রমের ঘর বলা হয়।তৃতীয় ঘর,ঘরের অধিপতি ও কারক গ্রহের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়,উক্ত ঘর থেকে শুভাশুভ ফল লাভের বিষয়।উক্ত ঘর,ঘরের অধিপতি ও কারক গ্রহ শুভ অবস্থানে থাকলে শুভফলের প্রাপ্তি হয়।আর অশুভ অবস্থানে শুভফলের প্রাপ্তি হয় না ।
কুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব
জন্মকুণ্ডুলী বিচারে কালপুরুষের কুণ্ডুলীর গুরুত্ব অপরিসীম। কালপুরুষের কুণ্ডুলীর বিচার ব্যতীত যে কোন কুণ্ডুলীর বিশ্লেষণ কখনও সম্পূর্ণ হয় না।অসম্পূর্ণ থেকে যায়।কালপুরুষের কুণ্ডুলীর হিসাব অনুযায়ী কন্যা লগ্ন বা রাশির তৃতীয় ঘরের রাশি হল বৃশ্চিক রাশি।বৃশ্চিক রাশিকে কালপুরুষের কুণ্ডুলীতে একটি নেগেটিভ রাশি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।কারণ উক্ত রাশি থেকে কালপুরুষের দুঃখ,কষ্ট,যন্ত্রণা,মৃত্যু বা মৃত্যুতুল্য কষ্টের বিচার করা হয় বলে।
কালপুরুষের কুণ্ডুলীর নেগেটিভ একটি রাশি কন্যা লগ্ন বা রাশির তৃতীয় ঘরে অবস্থান করায়,তাদের তৃতীয় ঘরের বিষয়গুলি নিয়ে সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।অনেক ক্ষেত্রে তৃতীয় ঘরের বিষয়গুলি তাদের দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তৃতীয় ঘর থেকে সাহস-পরাক্রম বা পরিশ্রমের সাথে ছোট ভাইবোন,পাড়া-পড়শী,ছোটযাত্রা,লেখনীকার্য্য,ডকুমেন্টেশন,সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদিরও বিচার করা হয়।তাই উক্ত সব বিষয়ের এক বা একাধিক ক্ষেত্র থেকে সমস্যা বা দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়।উক্তসব বিষয়গুলির করণীয় কর্ম সম্বন্ধে কনফিউশন তৈরী হয় বা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা উৎপন্ন হয়।
বৃশ্চিক রাশি থেকে কালপুরুষের দুঃখ,কষ্ট,যন্ত্রণার সাথে গুপ্তধন,গুপ্তবিদ্যার মত বিষয়ের বিচারও করা হয়।অর্থ্যাৎ উক্ত রাশির অশুভফলও রয়েছে,আর শুভফলও রয়েছে।যেমন কর্ম করা হয়,তেমন ফল লাভ হয়।শুভ কর্ম করলে শুভফল আর কুকর্ম করলে কুফল।এমনবস্থায় কন্যা লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের বৃশ্চিক রাশির শুভফল লাভের উপযুক্ত পথ অনুসরণ করে চলতে হয়।
বৃশ্চিক রাশির শুভফল লাভের উপায়
বৃশ্চিক রাশি থেকে শুভফল পাওয়ার উপায় হল,উক্ত রাশি স্থিত ঘরের করণীয় কর্মে উপযুক্ত সচেতনতা ও সঠিক বিচারের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।সেই সাথে বৃশ্চিক রাশি থেকে যেহেতু কালপুরুষের দুঃখ-কষ্টের সাথে মৃত্যুরও বিচার করা হয়,তাই বৃশ্চিক রাশিকে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের সাথে তুলনা করা যায়।মৃত্যু কখন আসে যেভাবে আমরা আগে অনুমান করতে পারি না,তেমনি অন্ধকারেও আমরা কোন কিছু খুঁজে পেতে পারি না।
উত্তম জীবন শৈলী ও সচেতনতার মধ্যে দিয়ে যেভাবে মৃত্যুকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়,তেমনি আলোর সাহায্যে অন্ধকারে কোনকিছু খুঁজে পাওয়া যায়।বৃশ্চিক রাশি থেকে জ্ঞানের আলোর সাহায্যে শুভফল লাভ করা যায়।আর আমাদের জ্ঞানকে সঠিক দিশা দেখানোর একমাত্র মাধ্যম হল ধর্ম।ধর্মপথে চলার মধ্যে দিয়েই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞানের ব্যবহার করা যায়।
তাই কন্যা লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকাদের তৃতীয় তথা সাহস-পরাক্রম বা পরিশ্রমের ঘরের করণীয় কর্মে উপযুক্ত সচেতনতা,সঠিক বিচার ও ধর্মপথ অবলম্বনে কর্ম করা উচিত।যে কোন ক্ষেত্রে সাহস পরাক্রমের ব্যবহার বা পরিশ্রম সচেতনতা,বিচার ও ধর্ম বিহীন করলে, সেই সাহস পরাক্রম বা পরিশ্রমের উপযুক্ত ফল প্রাপ্তি হয় না ।বরং সেই সাহস-পরাক্রম বিভিন্ন সমস্যা বা দুঃখ-কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
উপসংহার
অতএব কন্যা লগ্ন বা রাশির জাতক-জাতিকারা সাহস পরাক্রমের ব্যবহারে বা পরিশ্রমের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিচার,সচেতনতা ও ধর্মপথ অবলম্বন করে চলা উচিত।তাতে পরিশ্রমের সার্থকতা লাভ হয় এবং ভাগ্যের গঠনও হয় সুন্দর এবং মসৃণ ।
আরো পড়ুন