লগ্ন বা রাশিতে শুভ প্রভাবযুক্ত শনির অবস্থান জাতক- জাতিকাকে ন্যায়-নীতিজ্ঞ এবং কর্মঠ করে তোলে।এমন জাতক-জাতিকারা অল্পভাষী হন।অর্থাৎ কথার পরিবর্তে কাজে বিশ্বাসী হন।
কারো সাথে অন্যায়-অবিচার করেন না এবং কারো দ্বারা অপরের প্রতি অন্যায় অবিচার সহ্যও করতে পারেন না।শনিদেবের বৈশিষ্ট্যযুক্ত জাতক-জাতিকারা পরোপকারী হন। বিশেষত গরীর-শ্রমজীবী মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা করে তৃপ্তি লাভ করেন ।
লগ্ন বা রাশিতে শনির অবস্থানের বৈশিষ্ট্য
কর্ম ও ন্যায়ের অধিপতি শনির লগ্ন বা রাশিতে অবস্থান করা জাতক-জাতিকাদের কর্মক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে সাফল্য অর্জন করতে হয় ।কর্মক্ষেত্রে ন্যায়-নীতি বজায় রেখে চলতে হয় ।তবে শনি সবচেয়ে ধীর গতির গ্রহ হওয়ার কারণে সাফল্য তাদের জীবনে দেরীতে আসে।তবে যা আসে, তা ব্যয় হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে । কারণ কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে কোন কিছু অর্জন করলে,সেটা ব্যয় করার আগে যে কোন ব্যক্তি শতবার চিন্তা করেন।পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে অর্জিত সম্পদে গায়ের ঘাম জড়িয়ে থাকে।সেই সম্পদ অর্জন করতে যে দুঃখ,কষ্ট ব্যয়িত হয়,সেই দুঃখ-কষ্ট জড়িয়ে থাকে।
রাশি চক্রের দশম ও একাদশ ঘরের অধিপতি শনি।তথা কর্ম ও লাভের অধিপতি ।লাভ কর্মের উপর নির্ভর করে।শনি আমাদেরকে কর্ম অনুসারে ফল প্রদান করেন।যদি আমরা ভালো কর্ম করি,অর্থাৎ আমাদের কর্ম অপরের বা সমাজের কল্যাণে প্রয়োগ হয়,তাহলে আমরা অবশ্যই তৃপ্তিদায়ক ফল লাভ করি। আর যদি আমাদের কর্ম দ্বারা সমাজের বা অপরের ক্ষতি সাধন হয় ,তাহলে অবশ্যই সেই কর্মের ফল শুভ হয় না ।আমাদের কর্ম এবং কর্মফলের মধ্যে ভালোমন্দ পরিণামের জন্য আমরাই দায়ী ।শনি কোনভাবেই দায়ী নন ।
লগ্ন বা রাশিতে অশুভ বা পাপ প্রভাবযুক্ত শনির অবস্থানে বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা উৎপন্ন হয় ।শনি লগ্নে পীড়িত অবস্থায় অবস্থান করলে শারীরিক দুর্বলতা,দীর্ঘস্থায়ী রোগ,অনিদ্রার মত সমস্যায় ভুগতে হয় ।তেমনি রাশিস্থানে পাপ প্রভাবযুক্ত শনির অবস্থানে বিভিন্ন প্রকারের মানুষিক রোগের সম্মুখীন হতে হয় । আলস্য ও আত্মবিশ্বাসের অভাব পরিলক্ষিত হয়।
লগ্ন বা রাশি স্থানে শনির অবস্থানের ফল
রাশি চক্রের যে কোন একটি রাশির বৈশিষ্ট্য বজায় থাকা নির্ভর করে সেই রাশির বিপরীত রাশির সাথে উপযুক্ত ভারসাম্য গড়ে তোলার উপর ।যদি ভারসাম্য ভালো গড়া যায় ,তাহলে রাশির বৈশিষ্ট্য ভালো হয়।আর ভারসাম্য ভালো না হলে রাশির বৈশিষ্ট্যও ভালো হয় না।জন্মলগ্ন বা জন্মরাশির বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে সপ্তম ঘরের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখার উপর । লগ্ন বা রাশিতে অবস্থিত শনির সপ্তম দৃষ্টি পড়ে কুণ্ডুলীর সপ্তম ঘরে।তাই সপ্তম ঘরের সাথে উপযুক্ত ভারসাম্য গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে লগ্ন বা জন্ম রাশিতে অবস্থিত শনির শুভফল লাভ করা যায়।সপ্তম ঘরের যে কোন করণীয় কর্মে শনির বৈশিষ্ট্য তথা ধর্ম,ন্যায়-নীতির পালনের মধ্যে দিয়ে শনির শুভফল লাভ যায়।
অর্থ্যাৎ জীবনসঙ্গী,পার্টনার বা দৈনন্দিন জীবনের যে কোন প্রকারের আদান-প্রদানে ন্যায়-নীতি পালনের মধ্যে দিয়ে কর্ম করতে হয়।তাতে লগ্ন বা রাশিতে অবস্থিত শনির শুভফল লাভ করা যায় এবং সপ্তম ঘরের সাথে ভারসাম্য রক্ষার মধ্যে দিয়ে লগ্ন বা রাশির বৈশিষ্ট্যও ভালো রাখা যায়।
উপসংহার
অতএব জন্মলগ্ন বা জন্ম রাশিতে অবস্থিত শনির জাতক-জাতিকারা দৈনন্দিন জীবনের প্রত্যেক কর্মে ন্যায়-নীতি বজায় রাখুন।তাতে শনি লগ্ন বা রাশিতে শুভ বা অশুভ,যে কোনভাবেই অবস্থান করুন না কেন, শনির শুভফলের প্রাপ্তি অবশ্যই হয় ।
Read more